ভূমিকা:
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, যা সোমপুর মহাবিহার নামেও পরিচিত, বাংলাদেশের বৃহত্তম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলির মধ্যে একটি। নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত এই বিহারটি পাল রাজাদের সময়কালে নির্মিত হয়েছিল এবং ৮ম থেকে ১২ম শতাব্দী পর্যন্ত বৌদ্ধ শিক্ষা ও সংস্কৃতির একটি কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত হত।
ইতিহাস:
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন পাল রাজা ধর্মপাল (৭৮১-৮১০)। তার পুত্র দেবপাল (৮১০-৮৫০) এই বিহার নির্মাণ সম্পন্ন করেন। ধারণা করা হয় যে, বিহারটির নামকরণ করা হয়েছিল দেবপালের স্ত্রী রানী সোমদেবীর নামানুসারে।
স্থাপত্য:
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার একটি विशाल প্রাঙ্গণে অবস্থিত, যার আয়তন প্রায় ৩০০ একর। বিহারটির কেন্দ্রস্থলে একটি বর্গাকার মন্দির অবস্থিত, যার চারপাশে ১৭৭ টি ছোট ছোট কক্ষ সাজানো। মন্দিরের চার কোণে চারটি ছোট মন্দির রয়েছে।
বিহারের স্থাপত্যশৈলী বেশ জটিল ও মনোরম। ইটের তৈরি এই স্থাপত্যে বৌদ্ধ স্থাপত্যের বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। মন্দিরের দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের ভাস্কর্য ও খোদাই করা রয়েছে, যা বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে।
ঐতিহ্য:
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার শুধুমাত্র একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা নয়, বরং এটি বাংলাদেশের বৌদ্ধ ঐতিহ্যেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। প্রতি বছর, বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করেন।
পর্যটন কেন্দ্র:
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। প্রতি বছর, দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটক এই বিহার পরিদর্শন করেন।
গুরুত্ব:
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি বাংলাদেশের বৌদ্ধ ধর্মের সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রমাণ।
উপসংহার:
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার শুধুমাত্র একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা নয়, বরং এটি বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও বৌদ্ধ ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।
অতিরিক্ত তথ্য:
- পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি